শুক্রবার, মে ৩, ২০২৪
Google search engine
বাড়িঅন্যান্যমুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ জামালের কবর অযত্নে -অবহেলায়, স্থানীয়দের ক্ষোভ 

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ জামালের কবর অযত্নে -অবহেলায়, স্থানীয়দের ক্ষোভ 

অনলাইন ডেস্কঃ

স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের এক অকুতোভয় বীর সৈনিকের নাম শহীদ জামাল । অযত্নে -অবহেলায় পড়ে আছে তাঁর সমাধিস্থল, লাগে নেইম-প্লেট। পরিবারের সদস্য ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে দ্রুত সংস্কার করার দাবি করেছে।

মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শহীদ জামাল হোসেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী পৌরসভার চামুরিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম আব্দুল সরকার এবং মাতার নাম ছাকিরন নেছা। তাঁরা দুই ভাই ও তিনবোন।

ছোটবেলা থেকেই জামাল হোসেন ছিলেন খুবই হাসিখুশি কিন্তু দুঃসাহসিক। তিনি ১৯৬৮ সালে কালিহাতীর রামগতি শ্রীগোবিন্দ (আরএস) পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭১ সালে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ২য় বর্ষের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে দেশমাতৃকার টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। কালিহাতী হাইস্কুল মাঠে স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের প্রশিক্ষণ ক্যাম্প থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

মুক্তিযুদ্ধের প্রারম্ভে জামাল হোসেন ময়মনসিংহ থেকে টাঙ্গাইল এসে মুক্তিযোদ্ধাদের সুসংগঠিত করার জন্য কাজ করতেন। এছাড়া তৎকালীন সরকারবিরোধী আন্দোলন-সংগ্রামে সাহসের সাথে নেতৃত্ব দিয়েছেন।

১৯৭১ সালের ১৭ এপ্রিল কালিহাতী পোস্ট অফিস সংলগ্ন এলাকায় পাকিস্তানি হানাদাররা  জামাল হোসেনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এরপর শহীদ জামাল হোসেনকে নিজ গ্রাম চামুরিয়ায় কবর দেওয়া হয়।

সরেজমিনে শহীদ জামালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তাঁর কবরের ভেতরে ও চারপাশে জঙ্গলে ভরে গেছে। কবরের উত্তর ও পশ্চিম পাশের মাটি সরে গিয়ে ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে। কবরে লাগানো হয়নি নেইম-প্লেট।

স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল বলেন এতো বড়মাপের এক শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর এভাবে অযতেœ থাকা আমাদের জন্য লজ্জাজনক।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিবাদকারী খন্দকার মোখলেছুর রহমান মনি বলেন যাদের আত্মত্যাগে আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি তাদের কবর এভাবে থাকতে পারেনা। এটা আমাদের অবহেলার বহিঃপ্রকাশ।

শহীদ জামাল হোসেনের ভাতিজা আব্দুল কাদের বলেন কিছুদিন পূর্বে সরকারিভাবে কবরটি পাকাকরণের উদ্যােগ নেওয়া হয়। কিন্তু ঠিকাদার কাজটি অসম্পূর্ণ রেখেই চলে যায়। কবরে লাগানো হয়নি নেইম-প্লেট। যেকোন সময় ভেঙে পড়তে পারে। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা দ্রুত কবরটির সংস্থার চাই।

কালিহাতী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মিজানুর রহমান মজনু এবিষয়ে জানান, বিষয়টি আমার জানা ছিলো না, অত্যন্ত দুঃখ নিয় এবং লজ্জাজনক বিষয়। এব্যাপারে নির্বাহী অফিসারের সাথে কথা হয়েছে। তিনি দ্রুত সংস্কার করবেন।

কালিহাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হুসেইন বলেন, এবিষয়টি নিয়ে আমাদের লোক পাঠিয়েছি এস্টিমেট করার জন্য। আগামী এক সাপ্তাহের মধ্যে সংস্কারের কাজ শুরু করে দেব।

উল্লেখ, শহীদ জামাল হোসেনের নামে কালিহাতী উপজেলার কালীবাড়ীতে শহীদ জামাল উচ্চ বিদ্যালয়, ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ জামাল হোসেন হল ও শহীদ জামাল হোসেন স্মৃতিফলক এবং কালিহাতীর উত্তর বেতডোবায় শহীদ জামাল সড়ক রয়েছে।

একই জাতীয় খবর

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

- Advertisment -
Google search engine

সর্বাধিক পঠিত

সর্বাধিক মন্তব্য